31 Jan 2025, 02:47 pm

জাতিসংঘ নারী অধিকার কমিশন থেকে ইসরাইলকে বহিষ্কার করতে ২ হাজার মনোবিজ্ঞানীর চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বিশ্বের দুই হাজারেরও বেশি মনোবিজ্ঞানী ইহুদিবাদী ইসরাইলকে জাতিসংঘের নারী-অধিকার কমিশন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।

এই কমিশনের সচিব ও জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে লেখা এক চিঠিতে তারা এই দাবি জানিয়েছেন। তারা ওই চিঠিতে গাজার শিশু ও নারীদের মানসিক সুরক্ষার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদাসীনতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক অপরাধযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

তারা লিখেছেন, আজ বিশ্বের মনোবিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল এটা যে জাতিসংঘের নারী-অধিকার বিষয়ক কমিশন কি কেবলই কয়েকটি হাতে গোনা দেশের জন্য এবং ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুদের কোনো স্থান কি এ সংস্থায় নেই? জাতিসংঘের নারী-অধিকার কমিশনের সম্মানিত সদস্যরা কি এ পর্যন্ত সেইসব নারী ও শিশুদের মানসিক সুরক্ষা বা নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে দেখেছেন যারা বোমা, গুলি ও গোলার শব্দ শুনে তাদের দিন শুরু  করেন?

এই মনোবিজ্ঞানীরা ওই চিঠিতে আরও ক’টি প্রশ্ন তুলে ধরে লিখেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল এতসব নৃশংস আগ্রাসন চালানো সত্ত্বেও এখনও কিভাবে এই কমিশনের সদস্য-পদে বহাল রয়েছে এবং ইসরাইলের হাত ২৫ হাজারেরও বিশ নিরপরাধ নারী ও শিশুর রক্তে রঞ্জিত হওয়া সত্ত্বেও তেল-আবিবের শাসকগোষ্ঠী কোন্ মুখে নারী ও শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে?, অবৈধ ইসরাইল নারী-অধিকারের কথা বলে অথচ গাজার যুদ্ধে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই হল নিরপরাধ নারী ও শিশু! একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে জাতিসংঘের চোখ ও কানগুলো কি এইসব লোমহর্ষক নৃশংস অপরাধযজ্ঞের বিষয়ে বন্ধ হয়ে আছে?

বিশ্বের এই মনোবিজ্ঞানীরা জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ হওয়াসহ ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের প্রতি উদাসীনতার নানা পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে যত শিগগিরই সম্ভব এই জঘন্য ও ভুয়া সরকারকে এই সংস্থার সব তহবিল বা ফান্ড থেকে ও সর্ব-নিম্ন প্রতিক্রিয়া হিসেবে নারী অধিকার কমিশন এবং শিশু-অধিকার কনভেনশন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।

ইহুদিবাদী ইসরাইল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিমা সরকারগুলোর সর্বাত্মক সমর্থন ও সহায়তা নিয়ে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের মজলুম ও প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নতুন করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে বত্রিশ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ ও ৭৪ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাদের মাধ্যমে অবরুদ্ধ গাজার বেশ কয়েকজন নারী সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অনুরূপ নানা ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম তীরেও। ইসরাইলি কারাগারে বন্দী অনেক ফিলিস্তিনি নারীও ইসরাইলি সেনাদের যৌন-সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এমনকি ১০-১১ বছরের ফিলিস্তিনি কন্যা-শিশুও ইসরাইলি সেনাদের যৌন-পাশবিকতায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।

অবৈধ ইহুদিবাদী ইসরাইল সরকারের রূপরেখা গড়ে তোলা হয় ১৯১৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী ষড়যন্ত্রের আওতায় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনে মুহাজির হিসেবে পাঠিয়ে। ১৯৪৮ সালে এর অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। আর সেই সময় থেকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বা গণহত্যার নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে যাতে গোটা ফিলিস্তিনকে দখল করতে পারে ইহুদিবাদী ইসরাইল। ইহুদিবাদী ইসরাইল নানা অজুহাতে গাজা উপত্যকাকেও স্থায়ীভাবে দখল করার বা নিয়ন্ত্রণে রাখার ষড়যন্ত্র করছিল বলে নানা খবর এসেছে। গাজা-সংলগ্ন সাগরে ও সাগর-উপকূলে গ্যাস ও তেলের খনি রয়েছে এবং এসব খনিতে গ্যাস ও তেলের ব্যাপক মজুদ রয়েছে বলে মনে করা হয়।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 3396
  • Total Visits: 1534138
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1698

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ১৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ১লা শা'বান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, দুপুর ২:৪৭

Archives